Skip to main content

পাহাড়ে বাদাম চাষ

বাদাম একটি পুষ্টিকর খাবার। এতে যেমন অত্যাবশ্যকীয় তেল থাকে, তেমনি প্রয়োজনীয় খাদ্য উপাদান রয়েছে। ছেলে-বুড়ো, নারী-পুরুষ নির্বিশেষে সকলেরই একটি প্রিয় খাবার। বাদাম সাধারণত কৃষকেরা চরে, নদীর পাড়ে বংশ পরম্পরায় চাষ করে আসছে। যেখানে মাঠ ফসল চাষ বিভিন্নভাবে ব্যাহত হয়। দেখা যায়, যেখানে সেচের অভাবে ফসল উৎপাদন কষ্টকর, সেখানে সেচবিহীন শুধুমাত্র বৃষ্টির পানিতেই বাদাম চাষ করা যায়। এই চিন্তা ভাবনা থেকে উপজেলা কৃষি অফিস পাহাড়ের পাদদেশে চীনাবাদাম চাষের উদ্যোগ গ্রহণ করে। এই উদ্যোগকে বাস্তবায়ন করতে এগিয়ে আসেন নয়াবাজার গ্রামের, দূরছড়ি ব্লক, ১নং খাগড়াছড়ি ইউনিয়ন, সদর, খাগড়াছড়ির জনাব সজীব ত্রিপুরা। সজীব ত্রিপুরা একজন উদ্যামী, পরিশ্রমী এবং নতুন প্রযুক্তি গ্রহণে আগ্রহী  একজন অগ্রসরমান কৃষক। রাজস্ব খাতের প্রকল্পের আওতায় তার ৫০ শতক জমিতে তাকে ২০ কেজি বাদাম বীজ এবং সার ও অন্যান্য সহায়তা দেয়া হয়। একি সাথে তার সাথে উপজেলা কৃষি অফিস নিয়মিত যোগাযোগ করা হত এবং জমিতে  গিয়ে নিয়মিত পরিদর্শন করে প্রয়োজনীয় পরামর্শ দেয়া হত। এতে করে কৃষক জানতে পারে কখন কি করতে হবে, কি সার দিতে হবে, কি বালাইনাশক দিতে হবে, কি আন্তঃ পরিচর্যা করতে হবে। যেমন, আমরা জানি চরের মাটি বেলে দোআশ মাটি, যেখানে পাহাড়ের পাদদেশের মাটি হচ্ছে এটেল-দোআশ মাটি, তাই কৃষককে মাটি কুপিয়ে গাছের গোড়ায় দিতে বলা হয়। এতে করে দেখা যায় কৃষক মাত্র ২০ কেজি বাদাম দিয়ে ৩৫০ কেজির উপর বাদাম পায়। যা দেখে স্থানীয় কৃষকদের মাঝে ব্যাপক সাড়া ফেলে। সজীব ত্রিপুরার কাছ থেকে ইতিমধ্যে ১০ জন কৃষক বাদাম চাষের চাহিদা দিয়ে রেখেছে। বাজারে বাদামের চাহিদা অনেক। কৃষক বর্তমানে প্রতি কেজি ১২০ টাকা দরে বিক্রি করে। পতিত জমিতে এত লাভ পেয়ে কৃষকের অনুভূতি, সে সামনের রবি মৌসুমে ৫০ শতক জমিতে নয়, আরও ১.৫ একর জমিতে চীনা বাদাম চাষে আগ্রহ প্রকাশ করেছে।

-
উৎসঃ কৃষি বাতায়ন

Comments

Popular posts from this blog

অতন্দ্র জরিপ ১০.১০.১৮

হবিগঞ্জ জেলার চুনারুঘাট কৃষি অফিসের সার্বিক তত্ত্বাবধানে ধান ক্ষেতে রোগ এবং পোকামাকড় সনাক্তকরণের জন্য অতন্দ্র জরিপ চালানো হয় উপজেলার সাটিয়াজুরী ইউনিয়নে। জরিপে উপজেলা কৃষি অফিসারের সাথে কৃষি অফিসের অন্যান্য অফিসারগণ উপস্থিত ছিলেন। 

পরিবেশবান্ধব ইঁদুর দমন ব্যাবস্থাপনা || ডিএই, চুনারুঘাট, হবিগঞ্জ

ইঁদুর জাতীয় প্রাণী সম্পর্কে ধারণা পৃথিবীর সব স্তন্যপায়ী প্রজাতির মধ্যে শতকরা ৪২ ভাগ ইঁদুর জাতীয় প্রাণী। ইঁদুর জাতীয় প্রাণী রোডেন্টসিয়া বর্গের ও মিউরিডি পরিবারের অন্তর্ভুক্ত। সারা পৃথিবীতে ২৭০০টির অধিক ইঁদুর জাতীয় প্রজাতি আছে। এ প্রাণীদের সাধারণ বৈশিষ্ট্য হচ্ছে তাদের দাঁতের বিশেষ গঠন ও তার বিন্যাস। ১৬টি দাঁত থাকে। মাংসাশী ও পেষণ পূর্ব দাঁত নেই। তবে উভয় পাটিতে সামনে একজোড়া করে ছেদন দাঁত যা অত্যন্ত তীক্ষè ও ধারালো বাটালির মতো। ছেদন দাঁত গজানোর পর হতে মৃত্যুর পূর্ব পর্যন্ত প্রতিনিয়ত বাড়ে। কাটাকাটি না করতে পারলে দাঁত বেড়ে চুয়াল দিয়ে বেড় হয়ে যায় এবং ইঁদুরের খাওয়া বন্ধ হয়ে যায়। দাঁত ঠিক রাখার জন্য শক্ত জিনিস সর্বদা কাটাকাটি করে থাকে। ইঁদুর, কাঠবিড়ালি, সজারু ইঁদুর জাতীয় প্রাণী। চিকা ইঁদুর জাতীয় প্রাণী নহে। ইঁদুর সর্বভূক, নিশাচর এবং স্তন্যপায়ীদের মধ্যে সবচেয়ে ক্ষুদ্রতম সফল প্রাণী। এদের উপকারী ও অপকারী উভয় ভূমিকা রয়েছে। তবে ক্ষতিকারক ভূমিকাই বেশি । ইঁদুর দমনের প্রয়োজনীয়তা ১. ইঁদুর মাঠের সব প্রকার খাদ্য শস্যের ক্ষতি করে। বাংলাদেশে প্রতি বছর ইঁদুর ১২ থেকে ১৫ লাখ মেট্রিক টনের অধিক খাদ...

কৃষিতে ইঁদুর : সমস্যা ও সমাধান || কৃষি অফিস, চুনারুঘাট

বাংলাদেশে ফসল উৎপাদন বৃদ্ধি ও খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য অনিষ্টকর মেরুদণ্ডী প্রাণী দমন করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। অনিষ্টকর প্রাণীর মধ্যে ইঁদুর মাঠ ফসল উৎপাদন ও গুদামজাত শস্য সংরক্ষণের  ক্ষেত্রে একটি প্রধান সমস্যা। ইঁদুর গম ফসলে শতকরা ৩-১২ ভাগ, ধানের শতকরা ৫-৭ ভাগ ফসল নষ্ট করে। এরা বছরে ধান ও গমের প্রায় ৫০০ মেট্রিক টন পর্যন্ত ক্ষতি করে থাকে যার মূল্য আনুমানিক ৫০০ কোটি টাকার ও বেশি। তাছাড়া ইঁদুর মুরগির খামারে গর্ত করে, খাবার খেয়ে ডিম ও ছোট মুরগি খেয়ে প্রতি বছর খামারপ্রতি প্রায় ১৮ হাজার টাকা ক্ষতি করে থাকে। প্রতি বছর প্রায় ৫০ হাজার মেট্রিক টন গুদামজাত শস্য ইঁদুর দ্বারা ক্ষতি হয়ে থাকে। ইঁদুর মাঠের দানাজাতীয়, শাকসবজি, মূল জাতীয়, ফল জাতীয় ফসলের ক্ষতি করে থাকে। আবার গুদামঘরে সংরক্ষিত ফসলেরও  মারাত্মক ক্ষতি করে থাকে (প্রায় শতকরা ২০ ভাগ)। এরা যে শুধু ফসলেরই ক্ষতি করে তা নয়। বই খাতা, কাপড়, আসবাবপত্র, বিছানাপত্র ইত্যাদি কেটে নষ্ট করে। ইঁদুর প্রায় ৩০ প্রকার রোগ ছড়ায়। এছাড়া এরা বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ ও সেচ নালায় গর্ত করে নষ্ট করে, অনেক সময় বৈদ্যুতিক সরঞ্জামাদি কেটে অগ্নিকাণ্ডের সূত্র...