Skip to main content

বিশ্ব খাদ্য দিবস - ২০১৮

আজ মঙ্গলবার বিশ্ব খাদ্য দিবস। বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশেও দিবসটি উদযাপিত হচ্ছে।
দিবসটির এবারের প্রতিপাদ্য ‘কর্ম গড়ে ভবিষ্যৎ, কর্মই গড়বে ২০৩০-এ ক্ষুধামুক্ত বিশ্ব’। দিবসটি উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পৃথক বাণী দিয়েছেন।
রাষ্ট্রপতি তার বাণীতে বলেন, সরকারের বহুমুখী উদ্যোগ গ্রহণের ফলে বাংলাদেশ আজ খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জন করতে সক্ষম হয়েছে। বাংলাদেশ এখন বিশ্বের অন্যতম খাদ্যশস্য উৎপাদনকারী দেশ। দেশের ক্রমবর্ধমান জনসংখ্যার খাদ্য নিরাপত্তা অর্জনে কৃষি খাতে এ অর্জন ধরে রাখতে সংশ্লিষ্ট সবাইকে সচেষ্ট থাকতে হবে।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার বাণীতে বলেন, ধান, পাট, আলু, সবজি, ফলসহ মাছ, মাংস উৎপাদনে বাংলাদেশের সাফল্য আজ বিশ্ব স্বীকৃত। আমরা খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জন করেছি। আমরা খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পেরেছি। এখন পুষ্টি নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে আমাদের প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখতে হবে।

বিশ্ব খাদ্য দিবস উপলক্ষে দেশের সরকারি ও বিভিন্ন বেসরকারি সংস্থা নানা কর্মসূচি পালন করছে। আয়োজন এর অংশ হিসেবে আজ সকাল ১১ টায় হবিগঞ্জ জেলার চুনারুঘাট উপজেলা কৃষি অফিস থেকে এক বর্ণাঢ্য র‍্যালি বের করা হয়, যেখানে উপস্থিত ছিলেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার, উপজেলা কৃষি অফিসার, উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান, কৃষি সম্প্রসারণ অফিসার, উপসহকারী কৃষি অফিসার গণ সহ এলাকার গণ্যমান্য ব্যাক্তিবর্গ ও বিশিষ্ট কৃষকগণ। র‍্যালি শেষে বিশ্ব খাদ্য দিবস এর পটভূমি, মিশন ও ভিশন এবং সেই সাথে ২০৩০ সালের প্রতিপাদ্য বিষয় নিয়ে আলোচনা করেন সফল উপজেলা কৃষি অফিসার মহোদয়, উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান এবং উপজেলা নির্বাহী অফিসার মহোদয়। সভায় কৃষিকাজের তথা কৃষকের উন্নয়নের মাধ্যমে দেশের উন্নয়নের স্বীকৃতি এবং সেই উন্নয়নের ধারা অব্যহত রাখতে প্রশাসন এবং কৃষি অধিদপ্তরের একসাথে কাজ করে কৃষকের পাশে থাকার আহ্বান জানানো হয়। 






পটভূমি ও গুরুত্ব
বিশ্ব খাদ্য দিবস উদযাপন শুরু হয় ১৯৮১ সনে প্রথম আনুষ্ঠানিকতা আর প্রতিপাদ্য নিয়ে। ১৯৪৫ সনের ১৬ অক্টোবর জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থা FAO (Food and Agricultural Organisation) প্রতিষ্ঠিত হয়। বিশ্বের মানুষের প্রয়োজনীয় খাদ্যের জোগান, দরিদ্র ও পুষ্টিহীনতা দূর করে ক্ষুধামুক্ত পৃথিবী গড়ার অঙ্গীকার নিয়ে  FAO  তাদের কার্যক্রম শুরু করে।
মানুষ এ পৃথিবীতে জন্মগ্রহণ করে খাদ্যের অধিকার নিয়ে। আর এ অধিকার নিশ্চিত করার লক্ষ্যে বিশ্বের প্রতিটি দেশ নির্দিষ্ট কর্মপরিকল্পনা সামনে রেখে তা বাস্তবায়নের কাজ করে যাচ্ছে। তবে খাদ্যের সঙ্গে কৃষির সম্পর্কটি  অঙ্গাঅঙ্গিভাবে জড়িত, যদি কৃষিকে বাদ রেখে আমরা খাদ্যের কথা বলি তবে বিষয়টি হবে অযৌক্তিক।
একটি কথা অনস্বীকার্য, কৃষি ও গ্রামীণ উন্নয়ন হলে দারিদ্র্যবিমোচন হবে। বিশ্বের প্রতিটি দেশ খাদ্য নিয়ে বেশ সচেষ্ট। খাদ্যাভাবের কারণে সরকার পতনের নজির আমেরিকা মহাদেশের হাইতিতে দেখা গেছে। এক সমীক্ষায় দেখা গেছে, ২০২০ সালে ধান গম ছাড়াও অতিরিক্ত ১ কোটি ৪০ লাখ টন মাছ, মাংস, ডিম, ফল-মূল, শাকসবজি জাতীয় খাদ্য উৎপাদন করতে হবে। এ ভয়াবহ পরিসংখ্যান থেকে বুঝা যাচ্ছে প্রচলিত কৃষি বাদেও আমাদের আরও কিছু করতে হবে। এজন্য শুধু মাঠ ফসলের দিকে তাকিয়ে না থেকে পারিবারিক কৃষির দিকেও নজর দিতে হবে।

প্রচারেঃ উপজেলা কৃষি অফিস, চুনারুঘাট, হবিগঞ্জ।
নিবন্ধ কৃতজ্ঞতাঃ দৈনিক ইত্তেফাক, এআইএস ওয়েবসাইট

Comments

Popular posts from this blog

কৃষিতে ইঁদুর : সমস্যা ও সমাধান || কৃষি অফিস, চুনারুঘাট

বাংলাদেশে ফসল উৎপাদন বৃদ্ধি ও খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য অনিষ্টকর মেরুদণ্ডী প্রাণী দমন করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। অনিষ্টকর প্রাণীর মধ্যে ইঁদুর মাঠ ফসল উৎপাদন ও গুদামজাত শস্য সংরক্ষণের  ক্ষেত্রে একটি প্রধান সমস্যা। ইঁদুর গম ফসলে শতকরা ৩-১২ ভাগ, ধানের শতকরা ৫-৭ ভাগ ফসল নষ্ট করে। এরা বছরে ধান ও গমের প্রায় ৫০০ মেট্রিক টন পর্যন্ত ক্ষতি করে থাকে যার মূল্য আনুমানিক ৫০০ কোটি টাকার ও বেশি। তাছাড়া ইঁদুর মুরগির খামারে গর্ত করে, খাবার খেয়ে ডিম ও ছোট মুরগি খেয়ে প্রতি বছর খামারপ্রতি প্রায় ১৮ হাজার টাকা ক্ষতি করে থাকে। প্রতি বছর প্রায় ৫০ হাজার মেট্রিক টন গুদামজাত শস্য ইঁদুর দ্বারা ক্ষতি হয়ে থাকে। ইঁদুর মাঠের দানাজাতীয়, শাকসবজি, মূল জাতীয়, ফল জাতীয় ফসলের ক্ষতি করে থাকে। আবার গুদামঘরে সংরক্ষিত ফসলেরও  মারাত্মক ক্ষতি করে থাকে (প্রায় শতকরা ২০ ভাগ)। এরা যে শুধু ফসলেরই ক্ষতি করে তা নয়। বই খাতা, কাপড়, আসবাবপত্র, বিছানাপত্র ইত্যাদি কেটে নষ্ট করে। ইঁদুর প্রায় ৩০ প্রকার রোগ ছড়ায়। এছাড়া এরা বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ ও সেচ নালায় গর্ত করে নষ্ট করে, অনেক সময় বৈদ্যুতিক সরঞ্জামাদি কেটে অগ্নিকাণ্ডের সূত্র...

অতন্দ্র জরিপ ১০.১০.১৮

হবিগঞ্জ জেলার চুনারুঘাট কৃষি অফিসের সার্বিক তত্ত্বাবধানে ধান ক্ষেতে রোগ এবং পোকামাকড় সনাক্তকরণের জন্য অতন্দ্র জরিপ চালানো হয় উপজেলার সাটিয়াজুরী ইউনিয়নে। জরিপে উপজেলা কৃষি অফিসারের সাথে কৃষি অফিসের অন্যান্য অফিসারগণ উপস্থিত ছিলেন। 

প্রযুক্তি হস্তান্তরের জন্য কৃষক প্রশিক্ষণ ১৫.১০.১৮

বাংলাদেশের কৃষিব্যবস্থা প্রকৃতিনির্ভর। ৭০ ভাগ লোক প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে কৃষির ওপর নির্ভরশীল। দেশে মোট উৎপাদনের প্রায় ২৪% আসে কৃষি থেকে। কৃষি খাতে প্রবৃদ্ধির হার ৪%। পৃথিবীর অন্যান্য দেশের মতো সবুজ বিপ্লবের ফলে তথা নানারকম ফসলের জাত উন্নয়নে গত ৫০ বছরে দানাশস্যের ফলন বেড়েছে কয়েকগুণ। উচ্চফলনশীল ধান ও গমের জাতের সূচনার ফলে স্বাধীনতা উত্তর বাংলাদেশে খাদ্য উৎপাদন প্রায় তিন গুণ বেড়েছে। প্রযুক্তি প্রয়োগে কৃষির এই অভাবনীয় রণনৈপূন্যের ধারা অব্যহত রাখতে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের সহায়তা কৃষকের কাছে সর্বদা চলমান। আর এই ধারাবাহিকতায় উপজেলা পর্যায়ে প্রযুক্তি হস্তান্তরের জন্য কৃষক প্রশিক্ষণ (৩য় পর্যায়) প্রকল্প এর আওতায় "কৃষক প্রশিক্ষণ" চলছে উপজেলা কৃষক প্রশিক্ষণ কেন্দ্র, চুনারুঘাটে। প্রশিক্ষণের বিষবস্তুর বিভিন্ন দিক নিয়ে আলোকপাত করেন খামারবাড়ি হবিগঞ্জ এর অতিরিক্ত উপপরিচালক (উদ্ভিদ সংরক্ষণ) মহোদয় জনাব মোস্তফা ইকবাল আজাদ, উপজেলা কৃষি অফিসার মহোদয় এবং কৃষি সম্প্রসারণ অফিসার মহোদয়। কৃষিপ্রধান বাংলাদেশের খাদ্য নিরাপত্তা ও জাতীয় উন্নয়নে কৃষি গবেষণা ও সম্প্রসারণ বিশাল এবং ...