Skip to main content

জাতীয় ইঁদুর নিধন অভিযান || কৃষি অফিস, চুনারুঘাট

"ঘরের ইঁদুর মাঠের ইঁদুর ধ্বংশ করে অন্ন
সবাই মিলে ইঁদুর মারি ফসল রক্ষার জন্য"

ইঁদুর দমনের প্রয়োজনীয়তা এবং গুরুত্ব সাধারন কৃষকদের মাঝে ছড়িয়ে দিতে প্রতিবছরের ন্যায় এবারও "জাতীয় ইঁদুর নিধন অফিযান" চালানো হচ্ছে। সেই অভিযানের অংশ হিসেবে আজকে উপজেলা কৃষি অফিস, চুনারুঘাটের তত্ত্বাবধানে জাতীয় ইঁদুর নিধন অভিযান কে অনুপ্রাণিত করতে উপজেলায় এক বর্ণাঢ্য র‍্যালি ও র‍্যালি শেষে আলোচনা সভার আয়োজন করা হয় উপজেলা কৃষক প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে। 









আলোচনা সভায় ইঁদুর এর ক্ষতিকর দিক নিয়ে আলোকপাত করা হয়। কৃষক ভাইদের মধ্যে ইঁদুর নিধনের গুরুত্ব সম্পর্কে মত বিনিময় করা হয়। আলোচনা সভায় বিশেষ দিক নির্দেশনামূলক এবং বাস্তব সম্মত বক্তব্য তুলে ধরেন সুনামধন্য এবং পরিশ্রমী উপজেলা কৃষি অফিসার জনাব মোহাম্মদ জালাল উদ্দিন সরকার মহোদয়। এছাড়া আলোচনায় বক্তব্য তুলে ধরেন উপজেলার ভাইস চেয়ারমান আলহাজ্ব মোঃ লুৎফর রহমান মহালদার। সভায় বিশেষ বক্তব্য তুলে ধরেন খামারবাড়ি হবিগঞ্জের অতিরিক্ত উপপরিচালক (উদ্ভিদ সংরক্ষণ)  মোস্তফা ইকবাল আজাদ স্যার। উল্লেখ্য গাজীপুর ইউনিয়নের জারুলিয়া ব্লকের কৃষক মোঃ তাজুল ইসলাম, গত কয়েক দিনে প্রায় ২০০টি ইঁদুর নিধন করেছেন। আলোচনায় তাজুল ইসলাম তার ইঁদুর নিধনের আগ্রহের কারণ এবং কৌশল বর্ণনা করেন। আলোচনা সভায় আরও বক্তব্য রাখেন কৃষি সম্প্রসারণ অফিসার মোঃ সিপন মিয়া এবং উপসহকারী কৃষি অফিসারগণ। সভায় জাতীয় ইঁদুর নিধন অভিযান সফল করার আশাব্যক্ত করেন কৃষক ভাইগণ।

পটভূমি ও গুরুত্ব 
বাংলাদেশে ফসল উৎপাদন বৃদ্ধি ও খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য অনিষ্টকর মেরুদণ্ডী প্রাণী দমন করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। অনিষ্টকর প্রাণীর মধ্যে ইঁদুর মাঠ ফসল উৎপাদন ও গুদামজাত শস্য সংরক্ষণের  ক্ষেত্রে একটি প্রধান সমস্যা। ইঁদুর গম ফসলে শতকরা ৩-১২ ভাগ, ধানের শতকরা ৫-৭ ভাগ ফসল নষ্ট করে। এরা বছরে ধান ও গমের প্রায় ৫০০ মেট্রিক টন পর্যন্ত ক্ষতি করে থাকে যার মূল্য আনুমানিক ৫০০ কোটি টাকার ও বেশি। তাছাড়া ইঁদুর মুরগির খামারে গর্ত করে, খাবার খেয়ে ডিম ও ছোট মুরগি খেয়ে প্রতি বছর খামারপ্রতি প্রায় ১৮ হাজার টাকা ক্ষতি করে থাকে। প্রতি বছর প্রায় ৫০ হাজার মেট্রিক টন গুদামজাত শস্য ইঁদুর দ্বারা ক্ষতি হয়ে থাকে। ইঁদুর মাঠের দানাজাতীয়, শাকসবজি, মূল জাতীয়, ফল জাতীয় ফসলের ক্ষতি করে থাকে। আবার গুদামঘরে সংরক্ষিত ফসলেরও  মারাত্মক ক্ষতি করে থাকে (প্রায় শতকরা ২০ ভাগ)। এরা যে শুধু ফসলেরই ক্ষতি করে তা নয়। বই খাতা, কাপড়, আসবাবপত্র, বিছানাপত্র ইত্যাদি কেটে নষ্ট করে। ইঁদুর প্রায় ৩০ প্রকার রোগ ছড়ায়। এছাড়া এরা বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ ও সেচ নালায় গর্ত করে নষ্ট করে, অনেক সময় বৈদ্যুতিক সরঞ্জামাদি কেটে অগ্নিকাণ্ডের সূত্রপাত ঘটায়। এজন্য ইঁদুর দমন অত্যন্ত জরুরি।

নিবন্ধ কৃতজ্ঞতাঃ এআইএস ওয়েবসাইট।

Comments

Popular posts from this blog

প্রযুক্তি হস্তান্তরের জন্য কৃষক প্রশিক্ষণ ১৫.১০.১৮

বাংলাদেশের কৃষিব্যবস্থা প্রকৃতিনির্ভর। ৭০ ভাগ লোক প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে কৃষির ওপর নির্ভরশীল। দেশে মোট উৎপাদনের প্রায় ২৪% আসে কৃষি থেকে। কৃষি খাতে প্রবৃদ্ধির হার ৪%। পৃথিবীর অন্যান্য দেশের মতো সবুজ বিপ্লবের ফলে তথা নানারকম ফসলের জাত উন্নয়নে গত ৫০ বছরে দানাশস্যের ফলন বেড়েছে কয়েকগুণ। উচ্চফলনশীল ধান ও গমের জাতের সূচনার ফলে স্বাধীনতা উত্তর বাংলাদেশে খাদ্য উৎপাদন প্রায় তিন গুণ বেড়েছে। প্রযুক্তি প্রয়োগে কৃষির এই অভাবনীয় রণনৈপূন্যের ধারা অব্যহত রাখতে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের সহায়তা কৃষকের কাছে সর্বদা চলমান। আর এই ধারাবাহিকতায় উপজেলা পর্যায়ে প্রযুক্তি হস্তান্তরের জন্য কৃষক প্রশিক্ষণ (৩য় পর্যায়) প্রকল্প এর আওতায় "কৃষক প্রশিক্ষণ" চলছে উপজেলা কৃষক প্রশিক্ষণ কেন্দ্র, চুনারুঘাটে। প্রশিক্ষণের বিষবস্তুর বিভিন্ন দিক নিয়ে আলোকপাত করেন খামারবাড়ি হবিগঞ্জ এর অতিরিক্ত উপপরিচালক (উদ্ভিদ সংরক্ষণ) মহোদয় জনাব মোস্তফা ইকবাল আজাদ, উপজেলা কৃষি অফিসার মহোদয় এবং কৃষি সম্প্রসারণ অফিসার মহোদয়। কৃষিপ্রধান বাংলাদেশের খাদ্য নিরাপত্তা ও জাতীয় উন্নয়নে কৃষি গবেষণা ও সম্প্রসারণ বিশাল এবং ...

বিশ্ব খাদ্য দিবস - ২০১৮

আজ মঙ্গলবার বিশ্ব খাদ্য দিবস। বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশেও দিবসটি উদযাপিত হচ্ছে। দিবসটির এবারের প্রতিপাদ্য ‘ কর্ম গড়ে ভবিষ্যৎ, কর্মই গড়বে ২০৩০-এ ক্ষুধামুক্ত বিশ্ব ’। দিবসটি উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পৃথক বাণী দিয়েছেন। রাষ্ট্রপতি তার বাণীতে বলেন, সরকারের বহুমুখী উদ্যোগ গ্রহণের ফলে বাংলাদেশ আজ খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জন করতে সক্ষম হয়েছে। বাংলাদেশ এখন বিশ্বের অন্যতম খাদ্যশস্য উৎপাদনকারী দেশ। দেশের ক্রমবর্ধমান জনসংখ্যার খাদ্য নিরাপত্তা অর্জনে কৃষি খাতে এ অর্জন ধরে রাখতে সংশ্লিষ্ট সবাইকে সচেষ্ট থাকতে হবে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার বাণীতে বলেন, ধান, পাট, আলু, সবজি, ফলসহ মাছ, মাংস উৎপাদনে বাংলাদেশের সাফল্য আজ বিশ্ব স্বীকৃত। আমরা খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জন করেছি। আমরা খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পেরেছি। এখন পুষ্টি নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে আমাদের প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখতে হবে। বিশ্ব খাদ্য দিবস উপলক্ষে দেশের সরকারি ও বিভিন্ন বেসরকারি সংস্থা নানা কর্মসূচি পালন করছে। আয়োজন এর অংশ হিসেবে আজ সকাল ১১ টায় হবিগঞ্জ জেলার চুনারুঘাট উপজেলা কৃ...

ব্লাস্ট প্রতিরোধী ধানের জাত

ব্লাস্ট রোগ বাংলাদেশে ধানের প্রধান রোগগুলোর মধ্যে অন্যতম। প্রতিবছর আমন ও বোরো মৌসুমে কম-বেশি এ রোগের আক্রমণ দেখা দেয়। ব্লাস্ট প্রতিরোধী কিছু ধানের জাত... - বোরো মৌসুমে বিআর ৩, ৬, ৭, ১২, ১৪, ১৬, ১৭, ব্রি ধান ২৮ ও ৪৫ - আউশ মৌসুমে বিআর ৩, ৬, ৭, ১২, ১৪, ১৬, ২০,২১, ২৪ - আমন মৌসুমে বিআর ৪, ৫, ১০, ব্রি ধান ৩২, ‍ব্রি ধান ৩৩, ব্রি ধান ৪৪ উৎসঃ ব্রি ওয়েবসাইট