আলোক ফাঁদ প্রযুক্তিটি হচ্ছে রাতের বেলায় ক্ষেতে বৈদ্যুতিক বাল্ব টাঙানো, যেখানে বাল্বের নিচে পাত্র রাখা হয়। ওই পাত্রের মধ্যে ডিটারজেন্ট বা কেরোসিনমিশ্রিত পানি থাকে। আকৃষ্ট হয়ে পোকামাকড় আলোর কাছে আসে এবং পাত্রের পানির মধ্যে পড়ে মারা যায়। ওই পোকামাকড় দেখে ক্ষতিকর পোকামাকড়ের উপস্থিতি নির্ণয় করা হয়।
আলোক ফাঁদ প্রযুক্তি ব্যবহার করে আমন ধানে ক্ষতিকর পোকামাকড়ের উপস্থিতি পর্যবেক্ষণ ও দমন করার জন্য কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের সহায়তায় চুনারুঘাট উপজেলার কৃষকেরা সেপ্টেম্বর মাসের মাঝামাঝি থেকে সবগুলো ব্লকে আলোক ফাঁদ প্রযুক্তির ব্যবহার শুরু করেছেন এবং অক্টোবর মাস জুড়ে চলবে।
আলোক ফাঁদের কার্যকারিতা পর্যবেক্ষণের জন্য উপজেলা কৃষি অফিস থেকে উপজেলার আহমদাবাদ ইউনিয়নের রাজার বাজার ব্লকে উপস্থিত ছিলেন কৃষি সম্প্রসারণ অফিসার। এছাড়া উপস্থিত ছিলেন রাজার বাজার ব্লকের এসএএও এবং উপজেলা কৃষি অফিস এর এসএপিপিও। উপস্থিত কৃষকদের মধ্যে উপকারী এবং ক্ষতিকর পোকা চেনার আগ্রহ ছিল বেশ চোখে পড়ার মত।
উল্লেখ্য, ধানগাছে পোকামাকড়ের আক্রমণ স্বাভাবিক হলেও ফলনের জন্য তা খুবই ক্ষতিকর। ধানগাছে বাদামি ঘাসফড়িং, সবুজ ঘাসফড়িং, পাতা মোড়ানো পোকা, গান্ধী পোকা, মাজরা পোকাসহ বিভিন্ন ক্ষতিকর পোকা আক্রমণ করে। এর মধ্যে বাদামি ঘাসফড়িং বা কারেন্ট পোকা সবচেয়ে ক্ষতিকর। এ পোকা যে গাছে আক্রমণ করে, সেই গাছের শিষ সম্পূর্ণভাবে নষ্ট হয়ে যায়। এর ফলে ফলন কমে যায়। অনেক সময় ফলন নেমে আসতে পারে শূন্যের কোঠায়।
সাধারণত ধানে কাইচ থোড় আসার আগে এসব পোকামাকড়ের আক্রমণ দেখা দেয়। আমাদের দেশে এসব পোকামাকড় মারার জন্য কৃষকেরা সাধারণত বিষাক্ত কীটনাশক ব্যবহার করেন। অথচ কৃষি অধিদপ্তরে (ডিএই) খবর আসে, ধান চাষে কীটনাশক ব্যবহার করে কৃষকেরা কোনো সুবিধা পান না। উৎপাদন তো বাড়েই না, বরং উৎপাদন ব্যয় বাড়ে, আর এর পাশাপাশি পরিবেশও দূষিত হয়। এ ক্ষেত্রে কৃষি অধিদপ্তরের এই আলোক ফাঁদ প্রযুক্তি ব্যবহার করলে পরিবেশ বান্ধব, কম খরচে বেশি উৎপাদন পাওয়া সম্ভব।
Comments
Post a Comment